মূলত কুষাণ যুগে উত্তর পশ্চিম ভারতে পারসিক, গ্রিক, শক, পল্লব  প্রভৃতি বসতি স্থাপন করলে  এর সংমিশ্রণে গান্ধার শিল্পের উদ্ভব হয়। গ্রিক, রোমান, ভারতীয়, চিনা, পশ্চিম এশিয় শিল্পরীতির মিশ্রন ছিল গান্ধার শিল্পে। এটি উত্তর-পশ্চিম ভারত সীমান্তে গড়ে উঠেছিলো।

 রোমান সম্রাট অগাস্টাসের মডেলের গৌতম বুদ্ধের ভাস্কর্য এই গান্ধার শিল্পের প্রধান বিষয়বস্তু- বুদ্ধ ও বৌদ্ধ ধর্ম। এই শিল্পে মহাযান বৌদ্ধ ধর্মের প্রভাব লক্ষ করা যায়।



বস্ত্র সজ্জা- রোমান টগার আদলে বস্ত্র সজ্জা পরিলক্ষিত হয়। যক্ষ গরুর ও নাগ প্রভৃতি গ্রিক দেব দেবীর মডেলে তৈরি প্রতিমূর্তি এবং বুদ্ধ ও বোধিসত্ত্বের বিশাল মূর্তি এখানে পরিলক্ষিত হয়। ভারতীয় জীবনের সামগ্রিক প্রতিফলন এখানে লক্ষণীয়। আদিপর্বে গেরুয়া রং এবং কালো পাথরের ব্যবহার দেখা যায়। পরবর্তীতে স্টাকো ও টেরাকোটার ব্যবহার লক্ষিত হয় তবে ধাতুর ব্যবহার অজানা ছিল না। গান্ধার বুদ্ধ বিদেশি শান্ত ও নিষ্প্রাণ। এর আদি নিদর্শন লক্ষিত হয় আফগানিস্থানের বামিয়ানের বুদ্ধমূর্তি এবং পরিণত রূপ লক্ষিত হয় মোহরা মর্দান ও যাও লিওন নামক স্থানে। তক্ষশিলার কাছে সাহজিকিদেরি ও সিরকাপ স্থানে ধাতব ভাস্কর্য পরিলক্ষিত হয়। এর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল বুদ্ধের মৈত্রেয় বোধিসত্ত্ব মূর্তি, অবলোকিতেশ্বর পদ্মপানি মূর্তি, বুদ্ধের জীবন, জাতকের গল্প, যক্ষরাজ পঞ্চিকা ও তার রানী হারিতি। গজদন্ত শিল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গঙ্গা, শিকারের ছবি, পার্থিয়ান রীতিতে তৈরী এবং রত্নভাণ্ডার ছিল কপিশ নামক স্থানে।

গান্ধার কে কেন্দ্র করেই সর্বপ্রথম বুদ্ধের মূর্তি রূপ দান করা হয়। গান্ধার বুদ্ধের বহিরঙ্গ বৈদেশিক শিল্প কল্পনার দ্বারা প্রভাবিত হলেও ডক্টর কুমারস্বামীর ভাষায়-  "follows Indian tradition in every essential of its iconography".     

Post a Comment

Previous Post Next Post