পলিশ কাকে বলে:

পলিশ শব্দের অর্থ নগর রাষ্ট্র। প্রাচীন গ্রিসে কিছু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটেছিল যেগুলির যাবতীয় কাজকর্মে সেখানকার নাগরিকরা প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতেন। এই ক্ষুদ্র রাষ্ট্রগুলিকে গ্রীক ভাষায় পলিশ বলা হত। এর ইংরেজি নাম CITY STATE এবং বাংলায় নগর রাষ্ট্র






🔶 খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতকেও পারস্যের আক্রমণের বিরুদ্ধে গ্রিক পলিশ গুলি ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলেও পরবর্তীতে খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে ম্যাসিডনের আক্রমণের প্রতিরোধ করতে পলিগুলি ব্যর্থ হয়।


এথেন্স ও স্পার্টা



পলিশ গুলির পতনের বিভিন্ন কারণ ছিল:

 

সুযোগ্য সেনাপতির অভাব:

  • খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতক থেকে পলিশ গুলির অর্থনীতির শক্তি হ্রাস পেতে শুরু করেছিল।
  • অর্থনৈতিক চাহিদা মিটানোর জন্য সেনাপতিরা একইসঙ্গে একাধিক শক্তির সেবায় নিযুক্ত থাকতেন।
  •  সুযোগ্য সেনাপতির অভাব দেখা দেয়, ফলে সামরিক শক্তির দুর্বলতা প্রকট হয়ে ওঠে।




সামরিক ত্রুটি:

  • স্থল সেনারা ঢাল তরোয়াল এর যুদ্ধে দক্ষ থাকলেও পার্বত্য অঞ্চলে দক্ষতা দেখাতে পারেনি। 
  • বেশির ভাগ গ্রিক  সৈন্যরাই ছিল কৃষক ও অপেশাদার।
  •  তারা দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে চাইনি। ফলে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধে পলিশের সেনারা ব্যর্থ হয়।





নৌ শক্তির অভাব:

  • নদী নালা সমুদ্র দ্বারা বিস্তৃত গ্রিস কে বিদেশীদের আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য নৌ শক্তির অত্যন্ত প্রয়োজন ছিল।
  •  অর্থনৈতিক দুর্বলতার ফলে নৌ শক্তি ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়ে।
  •  এথেন্স নিজের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রাখতে গিয়ে অন্যান্য পলিশ গুলির নৌ শক্তি ধ্বংস করে দিয়েছিল। ফলে বিদেশী শক্তিগুলির ক্ষেত্রে তা লাভজনক হয়। 
  • নৌ শক্তি গুলির ব্যয়ভার বহন করতো এথেন্সের বহু ধনী পরিবার, যারা পরবর্তীতে এই ব্যয়ভার বহন করতে অস্বীকার করে।





নাগরিক অধিকার লোপ:
  • সাধারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার লুপ্তহয় এবং মুষ্টিমেয় ধনী নাগরিকের হাতে পলিশ গুলির রাজনৈতিক ক্ষমতা চলে যায়। 
  • সাধারণ মানুষকে নিয়ে গঠিত গণপরিষদের ক্ষমতা হ্রাস পায়।
  •  সাধারণ মানুষের বিচার পাওয়ার প্রধান কেন্দ্র গণ-আদালত এর বিলোপ করা হয়, ফলে পলিশগুলি দুর্বল হয়ে দ্রুত পতনের দিকে এগিয়ে যায়।





ক্রীতদাস প্রথা ও প্রযুক্তি বিমুখতা:
  • উৎপাদন ব্যবস্থায় সম্পূর্ণভাবে এখানকার জনগণ ক্রীতদাসের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিল।
  •  নাগরিকরা অলস ও কর্মবিমুখ হয়ে পড়ে।
  •  নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কারের আগ্রহ না দেখানো।






ব্যক্তি স্বার্থ বৃদ্ধি :
  • দেশের স্বার্থের পরিবর্তে পলিশের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যক্তিস্বার্থই বেশি গুরুত্ব পায়।
  •  এথেন্সের নাগরিকরা ডেমসথেনেস ও তার সঙ্গীদের হত্যার জন্য বহিরাগত মেসিডনের হাতে তুলে দিয়েছিল।





বাণিজ্যিক বিরোধ :
  • স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটাতে ব্যর্থ।
  •  পালিশ গুলি বৈদেশিক বাণিজ্যের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল।
  •  নিজেদের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফলে ঐক্য ধ্বংস হয় এবং সম্পর্কের অবনতি ঘটে।





ভাড়াটে সৈন্য:
  •  ইতিহাসবিদ ফিনলে গ্রিক পলিশ গুলির পতনের জন্য ভাড়াটে সৈনিকদের বিষয়টির উল্লেখ করেছেন।
  •  সামরিক বাহিনীতে ভাড়াটে সৈনিকের সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছিল।
  •  ভাড়াটে সৈনিক বৃদ্ধি পেলে গ্রিক পলিশ গুলির জাতীয় চরিত্র বিনষ্ট হয়।






 অনাগরিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি :
  • রাজনৈতিক কারণে নির্বাসিত মানুষ ও বিদেশীদের বসবাস ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে।
  •  পলিশ গুলির নাগরিকের অনুপাত কমে যায়।
  •  নাগরিকদের অর্থনৈতিক সমস্যা বৃদ্ধি পায়। 
  • অসন্তুষ্ট বহু নাগরিক অন্যত্র চলে যেতে থাকে।



রাজা দ্বিতীয় ফিলিপ

ম্যাসিডনের শ্রেষ্ঠত্ব :
  • পলিশ গুলির তুলনায় ম্যাসিডনের সামরিক দক্ষতা বেশি।
  •  রাজা দ্বিতীয় ফিলিপের সুদক্ষ সৈন্যবাহিনী।
  • পলিশ গুলি দখল।



✴️✴️✴️✴️✴️

Post a Comment

Previous Post Next Post